শিরোনাম
দীর্ঘ আট বছর পর মুক্তি পেয়েছে অনন্ত জলিলের নতুন সিনেমা ‘দিন দ্য ডে’। বরাবরের মতো এবারও তার সঙ্গী হয়েছেন বর্ষা। এই সিনেমায় গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে দেখা গেছে ঢাকাই সিনেমার খ্যাতিমান অভিনেতা মিশা সওদাগরকে।
বলা চলে, অনন্ত-বর্ষার সিনেমা মানেই মিশা সওদাগরের উপস্থিতি। তবে এই তারকা দম্পতির পরবর্তী সিনেমা ‘নেত্রী দ্য লিডার’-এ দেখা যাবে না মিশাকে।
সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মিশা সওদাগর বলেন, শত কোটি টাকা দিয়ে অনন্ত জলিলের ‘দিন দ্য ডে’ নির্মাণ করা হয়েছে। এতে দর্শক হয়তো বিনোদন পেয়েছে, কিন্তু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির তো কোনো লাভ হয়নি।
এই খল-অভিনেতার ব্যক্তিগত মতামত, এত বড় অঙ্কের টাকা দিয়ে তিনি (অনন্ত জলিল) ফিল্ম স্টুডিও, প্রোডাকশন হাউস, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বানালে অভিজ্ঞ, প্রবীণ ও এই সময়ের মেধাবী নির্মাতা, যোগ্য শিল্পী কলাকুশলীরা কাজ করতে পারবেন। এতে চলচ্চিত্র শিল্পের প্রভূত উন্নতি হবে। শত কোটি টাকা দিয়ে একটি সিনেমা না বানিয়ে এই অর্থে বছরে কমপক্ষে অর্ধশত সিনেমা নির্মাণ করলে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির চেহারা পাল্টে যেতে বাধ্য। এতে অনন্ত জলিল ‘কালচারাল ইমপোর্টেন্ট পারসন’ এবং চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি হয়ে উঠতে পারবেন।
এদিকে গত শনিবার (১৩ আগস্ট) মিশা সওদাগরের এসব মন্তব্যের কড়া জবাব দিয়েছেন অনন্ত জলিল। এদিন বিকেলে যমুনা ব্লকবাস্টারে ‘দিন দ্য ডে’র প্রদর্শনীতে গিয়ে তিনি জানান, মিশা সওদাগর একজন পুরোনো আর্টিস্ট। তিনি যেটা ভেবেছেন, সেটা বলেছেন। তিনি প্রযোজকও না, ক্রিয়েটিভ পার্সনও না। তার দ্বারা সিনেমার উন্নতি হয় না। যার কোনো ধরনের ইনভেস্টমেন্ট নেই, যার নতুন ক্রিয়েটিভিটি নেই তার দ্বারা চলচ্চিত্রের উন্নতি হবে কীভাবে?
অনন্ত জলিল আরও বলেন, কথা বলার আগে চিন্তা করতে হবে, কী ব্যাপারে আমি কথা বলছি। মিশা সাহেবের যদি এতই যোগ্যতা হয়, তাহলে আজ পর্যন্ত ‘দিন দ্য ডে’র মতো একটা সিনেমা বানাতে পারলো না কেন? একটা বানিয়ে দেখাত। তিনি তো আমেরিকাতে থাকে, তাকে আমেরিকান সিনেমা দেখতে বলেন।
মিশার উদ্দেশে অনন্ত বলেন, বাংলাদেশ থেকে টাকা নিয়ে আমেরিকায় বাড়ি-গাড়ি করেছেন। সেখানের সিনেমাও দেখেন। ‘দিন দ্য ডে’র সঙ্গে সেখানকার সিনেমার তুলনা করেন।
তিনি জানান, আমার একটাই কথা, মিশা সাহেবের কথাগুলো সত্যিই আপত্তিকর। তার মুখে এসব মানায় না। তার মুখে এ ধরনের কথা বলার যোগ্যতা নেই।
অনন্ত জলিলের এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে একটি গণমাধ্যমকে মিশা জানান, অনন্ত জলিল আমার কথা ভুলভাবে বুঝেছেন কিংবা ভুলভাবে ব্যাখা করেছেন। হতে পারে, কেউ তাকে আমার কথার ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছে। আমি আসলে অনন্ত জলিলের সমালোচনা করিনি, বাজেটের করেছিলাম।
তিনি আরও বলেন, একজন মানুষ হিসেবে অনন্ত দারুণ। তিনি ভালো ব্যবসায়ী। একজন ভালো প্রযোজক। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর দারুণ একটা গুণ আছে। কিন্তু মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ফলাও করে বলাটা হয়তো উচিত নয়। চলচ্চিত্রের মানুষদের পাশে শুধু অনন্তই নয়, আরও অনেকেই দাঁড়ান। তারা কিন্তু কখনও এগুলো সামনে আনেন না। আলমগীর ভাই, তিনি কত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তা জানলে সবাই অবাক হবেন। কিন্তু সেটা তিনি সামনে আনতে চান না। ডিপজল সাহেব কী পরিমাণ হেল্প করেন ধারণা আছে কারও? এই তালিকায় আরও অনেকেই আছেন।
‘চলচ্চিত্রে মিশার কোনো অবদান নেই’ অনন্ত জলিলের এই মন্তব্যের জবাবে মিশা বলেন, অবদান না থাকলে তো তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেতাম না। আমি নিজেও ছবি প্রযোজনা করেছি। তবে সেটি তেমন ব্যবসা করেনি।
এই খল-অভিনেতার ভাষ্য, ১২০ কোটি টাকায় ‘দিন দ্য ডে’ না বানিয়ে এই বাজেটে শাহরুখ খানের রেড চিলির মতো একটা স্টুডিও বানিয়ে দিতেন। তাহলে সেই স্টুডিওতে শাকিব খান, শুভ, বাপ্পি, সাইমন ও সিয়ামদের ছবি বানানো যেতো। অনন্ত যেহেতু শখে ছবি করেন, তিনিও বছরে একটা করে ভালো ছবি বানাতেন। আমার কথার মূল উদ্দেশ্য ছিল এটাই। কিন্তু তিনি সেটা না বুঝে কীসব বললেন।