ভালো কাজের জন্য তো কষ্ট করতেই হয়

ফানাম নিউজ
  ২৮ জুলাই ২০২২, ১২:৩২

আগামীকাল প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে চঞ্চল চৌধুরী অভিনীত নতুন সিনেমা ‘হাওয়া’। এটির প্রচারণা নিয়ে ঈদের পর থেকেই বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন এ অভিনেতা। এ সিনেমায় অভিনয় এবং প্রাসঙ্গিক কিছু বিষয় নিয়ে মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। সেই সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো। 

গত কিছুদিন থেকে ‘হাওয়া’ সিনেমার প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত আছেন। দর্শকের মধ্যে উচ্ছ্বাস কেমন দেখছেন?

এ সিনেমার একটি গান (তুমি বন্ধু কালা পাখি) প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই দর্শকের মধ্যে দারুণ আগ্রহ লক্ষ করছি। আমরা ঈদের পর থেকেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও জনগুরুত্বপূর্ণ জায়গায় গিয়ে দর্শকের মুখোমুখি হচ্ছি। তারা সিনেমাটি নিয়ে আগ্রহের কথা জানাচ্ছেন। এটা অবশ্যই একটি ভালোলাগার বিষয়। আমি নিজেও সিনেমাটির মুক্তির অপেক্ষায় আছি।

সিনেমাটি কেন দর্শক দেখবেন বলে আপনি মনে করেন?

গতানুগতিক ধারার সিনেমা নয় এটি। গল্পের পাশাপাশি নির্মাণে বৈচিত্র্য আনার জন্য পরিচালক বেশ পরিশ্রম করেছেন। এটির শুটিং শুরু করার আগে প্রত্যেক অভিনয়শিল্পীই অনুশীলন করেছেন, নিজের চরিত্র নিয়ে স্টাডি করেছেন। পরিচালকের নির্দেশ মতো সবাই চেষ্টা করেছেন চিত্রায়ণে। তাই আমি মনে করছি এটি উপভোগ্য একটি সিনেমা হবে।

এটির শুটিংয়ের সময় তো অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন?

সেটা অনেকদিন আগের কথা। সিনেমাটির বড় অংশের শুটিং হয় গভীর সাগরে। এর আগে সাগরে দীর্ঘদিন অবস্থান করার অভিজ্ঞতা ছিল না। তাই ঢেউয়ের প্রকোপে শুধু আমি নই অনেকেই অসুস্থ হয়েছিলেন। তবে এখন আর এ বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাই না। কারণ ভালো কাজের জন্য তো কষ্ট করতেই হয়।

সিনেমাটির একটি গান প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই এটি নিয়ে আলোচনা তৈরি হয়েছে। এ কারণেই কি দর্শক প্রেক্ষাগৃহে আসবে বলে মনে করেন?

তা তো বটেই। সিনেমার গান দেখে তো আর গল্প বোঝা যাবে না। তবে গল্পের কিছুটা ইঙ্গিত পাওয়া যায়। সে বিষয়টি নিয়েই হয়তো দর্শক সিনেমাটি দেখতে আসবেন।

গত ঈদ থেকেই দেশের চলচ্চিত্রাঙ্গন চাঙ্গা। এ সুসময় কি ‘হাওয়া’র জন্য সহায়ক হবে?

অবশ্যই। করোনাকালে তছনছ হয়ে গিয়েছিল চলচ্চিত্রাঙ্গন। বিশেষ করে সব প্রেক্ষাগৃহ দীর্ঘ মেয়াদে বন্ধ ছিল। সেগুলোর অধিকাংশই চালু হয়েছে গত ঈদ থেকে। আর ঈদের সিনেমাও দর্শক আগ্রহ নিয়েই দেখছেন। দর্শকের এ জোয়ারের মধ্যেই আমাদের সিনেমাটি মুক্তি পাচ্ছে। আশা করছি দর্শকের আশানুরূপ উপস্থিতি থাকবে।

গত ঈদে তো বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করেছিলেন। সেগুলোর সাড়া কেমন পেয়েছেন?

বেশ ভালোই। আসলে ঈদে দর্শক একটু বেশিই থাকে। আর বিনোদন বলতে এখনো নাটকই ঈদের সময় দর্শকদের আকৃষ্ট করে রাখে বেশি। আমি যে কটি নাটকে অভিনয় করেছিলাম, তার প্রায় প্রত্যেকটির জন্যই এখনো দর্শকের কাছ থেকে সাড়া পাচ্ছি।

কবে নাগাদ আবার শুটিংয়ে ফিরবেন?

ঈদের পরপরই অভিনয়ের জন্য ডাক পেয়েছি। কিন্তু ‘হাওয়া’ সিনেমার মুক্তি এবং প্রচারণাসহ প্রাসঙ্গিক আরও কিছু কাজের জন্য আমি ব্যস্ত থাকব আরও সপ্তাহখানেক। তারপর হয়তো শুটিংয়ে ফিরব। তবে যেহেতু সামনে বিশেষ কোনো উপলক্ষ্য নেই তাই কাজে ফেরার তাড়াটাও একটু কম।

‘ষাণ্ডা পান্ডা’ নামে একটি মাধ্যমে দীর্ঘদিন পর ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করছেন। এ দীর্ঘসূত্রতার কারণ কী?

আগে বছরের বেশিরভাগ সময় ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করতাম। নাটকের ফাঁকে ফাঁকে সিনেমায় অভিনয় করেছি। তবে এখন যেমন সিনেমার কাজ বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি ওয়েব মাধ্যমেও নিয়মিত কাজ করছি। তাই ধারাবাহিক নাটকের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার মতো পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছি না। তবে ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় কম করছি সময়ের অভাবে। এ ধরনের নাটকের প্রতি আমার যে আকর্ষণ তা একটুও কমেনি। আর একজন অভিনেতা হিসাবে সব মাধ্যমেই নিজেকে প্রসারিত করতে চাই। তবে ভালোর পাশাপাশি কিছু মানহীন কাজের প্রস্তাবও আসে, যেগুলোর কাজের প্রস্তাব শুরুতেই নাকচ করে দেই।

বর্তমান সময়ের নাট্যাঙ্গন নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কী?

আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে নাট্যাঙ্গন শক্তিশালী এখন। অনেক মেধাবী অভিনয়শিল্পী, নির্মাতা ও নাট্যকার কাজ করছেন। নাটক সেক্টরকে শৃঙ্খলিত রাখার জন্য কয়েকটি সংগঠন তৈরি হয়েছে। তাই কাজের ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা এসেছে। প্রতিনিয়তই ভালো কাজ বের হচ্ছে। দর্শকও এখন আগের চেয়ে নাটকের প্রতি আগ্রহী হয়েছেন। এ নিয়মতান্ত্রিক ধারা বজায় থাকলে নাট্যাঙ্গন আরও এগিয়ে যাবে। তবে অনলাইন প্ল্যাটফরমগুলোতে যেসব নাটক প্রচার হয়, সেগুলোর দিকে আরেকটু নজরদারি বৃদ্ধি করতে হবে। সর্বোপরি নাটকের জয় হোক-এটাই চাই।

সূত্র: যুগান্তর