শিরোনাম
ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম বাঙালি আইকন, বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী কি এবার সরাসরি রাজনীতির ময়দানে? টুইটের মাধ্যমে বুধবার বিকালে সৌরভের এক গুগলিতে উত্তাল হয়ে ওঠে ভারতীয় উপমহাদেশের ক্রিকেট ও রাজনীতি।
শুরু হয় সৌরভকে ঘিরে নতুন জল্পনা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় মহারাজের টুইটে লেখা, গত ৩০ বছরে ক্রিকেট আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। এবার নতুন কিছু শুরু করতে চাই। এমন কিছু করতে চাই যা মানুষের উপকার করবে।
আর এই যে ‘মানুষের উপকার করবে’ লেখার অংশ ঘিরেই জল্পনা অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু কী করবেন তিনি? কী সেই পরিকল্পনা? বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি করে স্বয়ং সৌরভ টুইটে লিখেছেন, ‘আজ আমি এমন কিছু শুরু করার পরিকল্পনা করেছি যাতে মানুষের উপকার হয়। আশা করি জীবনের নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করার সময়ে সবার সমর্থন পাব।’
জল্পনা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে সৌরভকে ফোন করে জানতে চান স্বয়ং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। উত্তরে সৌরভ জানিয়ে দেন, বিষয়টির সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।
তবে ৩ ঘণ্টা বাদে সৌরভ নিজেই হেয়ালি ছেড়ে জানিয়ে দেন, ‘রাজনীতি নয়, একটি নামি শিক্ষামূলক অ্যাপে বিজ্ঞাপনী মডেল হয়ে প্রচার’ করবেন। প্রায় ৫০ কোটি রুপির বিজ্ঞাপনী প্রচারের ‘টিজার’র অংশ হিসাবে সংস্থার শর্ত মেনেই সৌরভ টুইটে গুগলি ছোড়েন নয়া ইঙ্গিত দিয়ে।
মহারাজকীয় টুইটে দিল্লি থেকে কলকাতা, এমনকি ঢাকার ক্রীড়া জগতেও একটাই প্রশ্ন, শেষপর্যন্ত কী সৌরভ রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছেন? যদি দেন তা হলে কোন দলে? কারণ, ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, দুজনের সঙ্গেই সৌরভের ঘনিষ্ঠ এবং ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে।
২ সপ্তাহ আগে শাহ সদলবলে সৌরভের কলকাতার বাড়িতে নৈশভোজে গিয়েছিলেন। জল্পনা বৃদ্ধির মূল কারণ ছিল, এদিন টুইটে সৌরভ বলেন, ‘২০২২ সালে আমার ক্রিকেটের ময়দানে পা রাখার ৩০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। ১৯৯২ সালে আমি ক্রিকেটের ময়দানে পা রেখেছি। তারপর ক্রিকেট আমাকে এতদিনে অনেক কিছু দিয়েছে। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণভাবে ক্রিকেটের মাধ্যমেই আমি আপনাদের সমর্থন পেয়েছি। যারা আমাকে এতদিন সমর্থন করেছেন আমি তাদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আজ আমি নতুন কিছু শুরু করতে চাই। আমি এমন কিছু করতে চাই, যেটা মানুষের উপকারে লাগবে।’
সৌরভের এই টুইটের পরই গুজবে ছড়িয়ে পড়ে, তিনি বিসিসিআই সভাপতির পদ ছাড়ছেন। কিন্তু পরে ভারতীয় ক্রিকেটের বোর্ড সচিব জয় শাহ স্পষ্ট করে দিয়েছেন, সৌরভ বিসিসিআই সভাপতির পদ ছাড়েননি। এতে আরেকটা সম্ভাবনা প্রবলভাবে উঠে আসছে।
সেক্ষেত্রে কি বিসিসিআই সভাপতি রাজনীতিতে পা রাখতে চলেছেন? এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় ভারতীয় সময় রাত ৮টায়। আসলে সৌরভের রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা একেবারেই নতুন কিছু নয়।
সেই ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকে ভারতীয় ক্রিকেটের বোর্ড সভাপতির রাজনীতিতে যোগ নিয়ে জল্পনা চলছে। সদ্যই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সৌরভের বাড়িতে গিয়েছিলেন নৈশভোজ সারতে। তারপর সেই জল্পনা আরও প্রবল হয়।
সৌরভের রাজনীতিতে যোগের জল্পনা শুরু হতেই আসরে নেমেছে রাজনৈতিক দলগুলো। বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলছেন, সৌরভের মতো লোক রাজনীতিতে যোগ দিলে তাকে স্বাগত জানাব। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলছেন, সৌরভ যদি রাজনীতিতে আসেন, সেটা যদি বিরোধী দলেও হয়, তাহলে তাকে স্বাগত।