শিল্পীদের কল্যাণে ইলিয়াস কাঞ্চন

ফানাম নিউজ
  ১৩ এপ্রিল ২০২২, ১১:৩৬

চার দশকের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে ইলিয়াস কাঞ্চন উপহার দিয়েছেন অনেক ব্যবসাসফল সিনেমা। ঢালিউডের সর্বাধিক ব্যবসাসফল সিনেমা ‘বেদের মেয়ে জোছনা’র নায়কও তিনি। 

তবে সম্প্রতি খুব বেশি অভিনয়ে দেখা যায় না এই অভিনেতাকে। ইদানীং তিনি বেশি ব্যস্ত রয়েছেন নিরাপদ সড়ক আন্দোলন নিয়ে। সারা দেশেই তিনি ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ সংগঠনের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন। নিজেকে জড়িয়েছেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কার্যক্রমের সঙ্গেও। সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন কাঞ্চন।

সময় কেমন কাটছে জানতে চাইলে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘সময় ভালোই কাটছে। শিল্পী সমিতির কাজ আর নিরাপদ সড়ক চাইয়ের কার্যক্রম নিয়েই বেশি ব্যস্ত আছি।’

কয়েক দিন আগে সম্প্রচারিত হয়েছে ইলিয়াস কাঞ্চন অভিনীত নাটক ‘বইওয়ালা’। নাটকটি নিয়ে বেশ সাড়া পাচ্ছেন তিনি।  এ বিষয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘অনেক দিন ওই অর্থে অভিনয় করা হচ্ছে না। কারণ আমাদের জন্য, আমাদের উপযোগী করে গল্প নিয়ে কেউ আসছে না। এই “বইওয়ালা” নাটকটির গল্প হাতে পাওয়ার পর ভালো লেগে যায়। মনে হয়েছিল, চরিত্রটি অসাধারণ। এ ধরনের চরিত্রের প্রতি এখনো আমার অনেক লোভ আছে। কাজটি করতে গিয়েও বেশ ভালো লেগেছে। তরুণ একটি টিম। বেশ যত্ন করে তারা কাজটি করেছে।’

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কাজ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সমিতির কাজ ভালোভাবেই চলছে। অল্প দিন হলো কাজ শুরু করেছি। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। ভোটাধিকারবঞ্চিতদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিয়েছি। আরও কাজ হবে। শিল্পীদের স্বার্থে নানামুখী উদ্যোগ আমরা নেব। এ ছাড়া নির্বাচনের আগে থেকেই আমি বলে আসছি সিনেমার উন্নয়নের কাজে ওতপ্রোতভাবে থাকব। নির্বাচনেও আসতে চাইনি, সবাই বলার পর ভেবেছি শিল্পীদের কল্যাণে কাজ করা দরকার। তাই সমিতির নেতৃত্বে এসেছি। 

চলচ্চিত্রের শিল্পীদের অনুদানের টাকায় নয়, কাজ করে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। শিল্পীদের কেন মানুষ দুস্থ বলবে? আমরা অনেক সিনেমা বানানোর উদ্যোগ নেব। আমার যেহেতু এখান থেকে আর কিছু নেওয়ার নেই, তাই সিনেমার স্বার্থেই কাজ করব। শিল্পীরা আমাকে ভালোবাসেন। আমি চেষ্টা করব তাদের কল্যাণের জন্য কাজ করতে।’ ১৯৫৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন ইলিয়াস কাঞ্চন। ১৯৭৭ সালে ‘বসুন্ধরা’র মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। এ যাবৎ প্রায় ৪০০ সিনেমায় কাজ করেছেন। তার ক্যারিয়ারের স্বর্ণযুগ ছিল ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত। এরপর ধীরে ধীরে অভিনয় কমিয়ে দেন। 

১৯৮৯ সালে তার ক্যারিয়ারের সেরা চলচ্চিত্র ‘বেদের মেয়ে জোছনা’ মুক্তি পায়। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন অঞ্জু ঘোষ। এরপর তিনি অসংখ্য দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্র উপহার দেন। যার মধ্যে আঁখি মিলন, শঙ্খমালা, অচেনা, রাধা কৃষ্ণ, ত্যাগ, সিপাহী, বেনাম বাদশা, আদরের সন্তান, ভেজাচোখ, রক্তের অধিকার, চরম আঘাত, স্বজন, ভাঙচুর উল্লেখযোগ্য।

অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ পেয়েছেন নানা পুরস্কার। সমাজসেবায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০১৭ সালে তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে।

সূত্র: দেশ রূপান্তর