খাগড়াছড়িতে সহিংসতায় ৭ কোটি টাকার ক্ষতি

ফানাম নিউজ
  ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২০:২০

খাগড়াছড়িতে সাম্প্রতিক সহিংসতায় হতাহতের সংখ্যা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষের ঘটনায় সাত কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন তথ্য জানানো হয়।

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-এর রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, অশান্ত পাহাড়ে ফিরতে শুরু করেছে শান্তি। তবে এখনও অদৃশ্য আতঙ্ক কাটেনি পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে। খাগড়াছড়িতে শান্তি ফেরাতে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখতে স্থানীয়দের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক করছে স্থানীয় প্রশাসন।

এদিকে স্থানীয় প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, খাগড়াছড়ি ও দীঘিনালায় সাম্প্রতিক হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগে তিন জন নিহত, ২০ আহতসহ ৮৭টি স্থায়ী ও সড়কের পাশে ভ্রাম্যমাণ ৯৪ ব্যবসায়ীদের দোকান পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। লুটপাট করে নিয়ে যাওয়া হয় ২৬টি দোকানের মালামাল। অগ্নিসংযোগ করা হয় গণপরিবহনেও ব্যাটারিচালিতি ইজিবাইক, সিএনজি, মোটরসাইকেলসহ ২০ গাড়িতে। ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে ২৬টি দোকানে। এর মধ্যে স্থায়ী দোকানের মধ্যে বাঙালিদের ৩০টি ও পাহাড়িদের ৫৭টি দোকান রয়েছে।

লুট-পাট হওয়া মোবাইলের দোকান তারেং-এর স্বত্বাধিকারী কুসুম চাকমা বলেন, ‘আমার দোকানে ভাঙচুর করে মোবাইলসহ ইলেকট্রনিকসের সব মালামাল নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।’

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার লারমা স্কয়ার এবং বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে সেদিনের সহিংসতার ক্ষত চিহ্ন। দোকানপাটের মালামাল ভস্মীভূত অবস্থায় পড়ে আছে।’

সেখানে গত কয়েকদিন আগেও সাজানো গোছানো ছিল দোকান পাট। ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারনায় মুখরিত ছিল। এখন বিষাদে পরিণত হয়েছে। কয়েকটি দোকানের মালিক নতুন করে অবকাঠামো তৈরি করতে কাজ করছেন। অনেকেই জানিয়েছেন হতাশার কথা। ধারদেনা করে ঘুরে দাঁড়াবেন- তারও উপায় নেই। অনেকে আবার আগের ঋণ কী করে পরিশোধ করবেন- তা নিয়েও চিন্তিত। লারমা স্কয়ার এবং বাস টার্মিনালে পাহাড়ি-বাঙালি সব সম্প্রদায়ের লোকজন ব্যবসা করতেন।

বোয়ালখালী বাস টার্মিনালের পাহাড়িকা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের মালিক দিপন চাকমা বলেন, ‘উপার্জিত সব অর্থ ব্যয় করে গত কিছুদিন হলো নতুন করে দোকান তৈরি করেছি। দোকানে মালামাল ভরপুর ছিল। দোকানটি ছিল একমাত্র আয়ের উৎস। সহিংসতায় দোকান পুড়ে অন্তত ৪০/৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সহায় সম্বল হারিয়ে আমি এখন নিঃস্ব। কী করবো, কীভাবে পরিবারের ভরণপোষণ চালাবো, তা নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন।’