হিলি স্থলবন্দরে ভারতীয় ট্রাক চালকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হচ্ছে না 

ফানাম নিউজ
  ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৯:১৫

করোনার আরেক নতুন আতঙ্কের নাম ওমিক্রন। ভারতে এই সংক্রমণটি দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। ভারতে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে নেওয়া হয়নি বাড়তি সতর্কতা। সূত্র: আরটিভি

প্রতিদিন এই বন্দর দিয়ে আমদানি পণ্য নিয়ে শত শত ট্রাক চালকরা দেশে প্রবেশ করলেও করা হচ্ছে না তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা। এ কারণে ওমিক্রনের সংক্রমণ ঢুকে পড়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা। এদিকে ভারত থেকে পাসপোর্টে আসা যাত্রীদের শুধুমাত্র স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। আর একারণে বাংলাদেশ ও ভারতের সঙ্গে এই বন্দরের মাধ্যমে সীমান্ত বাণিজ্য চালু থাকায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন হিলি স্থলবন্দরের মানুষরা।

সম্প্রতি ভারতে ওমিক্রনে মারাও গেছেন ১ জন। বিশ্বে করোনা ছড়িয়ে পড়লে গত বছরের মার্চ মাস থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাসপোর্টে যাত্রী আসা-যাওয়া এবং সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ করে দেয় সরকার। তবে ওই বছরের সেপ্টেম্বর থেকে সীমান্ত বাণিজ্য চালু হলেও এর অনেক পরে ভারত থেকে বাংলাদেশে যাত্রী আসার অনুমতি দেওয়া হয়। এরফলে বর্তমানে প্রতিদিন এই পথে গড়ে ৪-৫জন পাসপোর্ট যাত্রী আসছেন দেশে।

করোনার নেগেটিভ সনদ নিয়ে দেশে ফেরার পরে স্থলবন্দরে পাসপোর্ট যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। সন্দেহ হলে করানো হচ্ছে করোনা টেস্ট। কিন্তু স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ১৮০-২০০ পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে ৪০০ জন চালক ও সহকারী দেশে প্রবেশ করলেও শুধুমাত্র চালকদের তাপমাত্রা পরিমাপ, গাড়িতে জীবাণুনাশক স্প্রে করার মাধ্যমে সীমাবদ্ধ থাকছে এই কার্যক্রম। কিন্তু ভারত-বাংলাদেশের অংশে করোনার এন্টিজেন টেস্ট করা হচ্ছে না ভারতীয় ট্রাক চালকদের। ফলে বন্দরের অভ্যন্তরে ভারতীয় চালকদের সংস্পর্শে বাংলাদেশী চালক ও শ্রমিকরা আসায় ওমিক্রন সংক্রমণের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।

বিমল দাস নামে একজন ভারতীয় ড্রাইভার জানান, ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় কোন প্রকার করোনাভাইরাসের টেস্ট করা হয়নি। শুধু মাত্র ট্রাকের চাকাতে স্প্রে করা হয়েছে। হ্যান্ড স্ক্যানার দিয়ে তাপমাত্রা মাপা হয়েছে। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে ড্রাইভারাও আতঙ্কে রয়েছেন।

হিলি পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোবহরাব হোসেন  জানান, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে। ভারতীয় ড্রাইভারদের জন্য আলাদা গোসলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমনকি কোন ভারতীয় ড্রাইভার যেন বন্দরের বাইরে না যেতে পারে সেই জন্য গেটে অবস্থানরত সিকিউরিটি গার্ডকে সব সময় সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। মাস্ক ব্যবহার করার জন্য সব সময় মাইকের মাধ্যমে সচেতন করাও হচ্ছে বলে জানান তিনি।

হিলি ইমিগ্রেশন ওসি সেকেন্দার আলী জানান, হিলি ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারত থেকে পাসপোর্ট যাত্রীরা প্রতিদিন বাংলাদেশে প্রবেশ করছেন। সম্প্রতি হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে ভারত থেকে করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়ে দেশে আসা পাসপোর্ট যাত্রীদের মধ্যে, এখন পর্যন্ত তিনজনের শরীরে পুনরায় করোনা পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে। তাদেরকে আমরা হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসোলেশনে রেখেছি।

হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার হুমায়ুন কবির  জানান, ভারতীয় ট্রাক চালকদের সংস্পর্শে বাংলাদেশি শ্রমিকরা আসলে এটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে। এ বিষয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। তবে চালকদের তাপমাত্রা পরিমাপসহ গাড়িতে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। বন্দরের ভেতরে চালকদের আলাদা থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে জনগণকে সব সময় সচেতন করাও হচ্ছে।