১৮ দিনের সন্তানকে বিক্রি করল বাবা 

ফানাম নিউজ
  ২২ জানুয়ারি ২০২২, ১৭:৫০

পিরোজপুরের নেছারাবাদে (স্বরূপকাঠী) অভাবের কারণে ১৮ দিনের শিশু সন্তানকে বিক্রি করে দিলেন বাবা। বিক্রি করে শিশুটির বাবা পেয়েছেন ১০ হাজার টাকা। পরে সন্তান বিক্রির টাকা নিয়ে যান স্থানীয় একটি প্রতারক চক্র। সূত্র: আরটিভি

শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) রাতে শিশুটিকে ঢাকা থেকে পুলিশ উদ্ধার করে। এর আগে উপজেলার দুর্গাকাঠি গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।

জানা গেছে, উপজেলার দুর্গাকাঠি গ্রামের পরিমল বেপারী তার ১৮ দিনের কন্যাশিশুকে বিক্রি করে দেন ঢাকার নাম না জানা এক ধনাঢ্য দম্পতির কাছে। ওই ক্রেতা দম্পতির কাছ থেকে স্থানীয় একটি প্রতারক চক্র ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার বিনিময় বিক্রি করেন। গত কয়েক দিন ধরে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ওই শিশুটি বিক্রির সঙ্গে জড়িত প্রতারক চক্রের দুই সদস্য একই গ্রামের বিজন হালদার ও রনজিত কুমার মণ্ডল এলাকা থেকে আত্মগোপন করেছেন।

শিশুটির বাবা পরিমল বেপারী জানান, আমি খুবই একজন গরিব লোক। আমার নিজের কোনো জায়গা-জমি নাই। অন্যের ভাঙা ঘরে স্ত্রী ও চার সন্তান নিয়ে বাস করি। আমি ও আমার স্ত্রী মানুষের কাছে হাত পেতে যা পাই, তা দিয়ে চাল কিনে কোনোরকম দিন কাটাই। গত প্রায় ৩৪ থেকে ৩৫ দিন আগে আমার স্ত্রী একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। সন্তানের বয়স যখন ১৮ দিন তখন সেটিকে বিক্রি করে দিই।

তিনি আরও জানান, আমাদের অভাবের কথা শুনে গ্রামের বিজন হালদার আমাকে বলেন, তোমার বাচ্চাটি দিয়ে দাও। বিক্রি করে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিব। পরে দেখি ঢাকা থেকে প্রাইভেটকার গাড়িতে করে এক বড় লোক পরিবার আসেন। তারা বিজনের কাছে টাকা দেন। আমার বাচ্চাটি নিয়ে যান। পরে বিজন আমাকে ১০ হাজার টাকা দেয়। তবে আমি ওই বড়লোক পরিবারে নাম-ঠিকানা জানি না।

পরিমলের স্ত্রী কাজল বেপারী বলেন, সন্তান জন্ম দেওয়ার পর থেকে আমি অসুস্থ ছিলাম। ওর মুখখানিও দেখতে পারিনাই। আমি সুস্থ হইয়া জানছি আমার মাইয়াডা বিক্রি হইয়া গেছে। মাইয়াডার কথা মনে পড়লে আমার খুব কষ্ট হয়।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য জহর মিস্ত্রি বলেন, বিজন একজন দালাল কায়দার লোক। জমি আর নিঃসন্তান ঘরে সন্তান বেচা ওর কাজ। আর এ নিয়ে কেউ কিছু বললে তাকে হুমকি দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত বিজন হালদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি এলাকায় রাজনীতি করি। তাই এলাকার কিছু লোক প্রতিহিংসাবশত আমার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে। অন্যের সন্তান আমি কেন বেঁচে দেব?

নেছারাবাদ থানার ওসি মো. আবির মোহাম্মাদ হোসেন জানান, ওই শিশুটিকে ঢাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে বাচ্চাটি বিক্রির কথা শুনিনি। তা ওই লোকের কাছে পালতে দিয়েছিল বলে শুনেছি। শিশুটিকে আগামী রোববার (২৩ জানুয়ারি) আদালতে দেওয়া হবে।